প্রয়াত কবি রফিক আজাদের ধানমণ্ডির বাড়ির একাংশ গুঁড়িয়ে দিয়েছে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। প্রায় ২৯ বছর তিনি এই বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করেছেন এবং এখানেই রচনা করেছেন ২০টিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ। বুধবার সকালে পূর্ব পাশে থাকা দুটি ইউনিট ভাঙার কাজ শুরু হয়।
ধানমণ্ডির ১ নম্বর সড়কের ১৩৯/৪এ নম্বর বাড়িটিতে মোট চারটি ইউনিট ছিল। এর মধ্যে একটি ইউনিটে এখনও বসবাস করছেন কবির স্ত্রী কবি দিলারা হাফিজ। বাকি তিনটি ইউনিট অন্যদের নামে বরাদ্দ ছিল। বাড়িটির আয়তন প্রায় ৫ কাঠা জমির ওপর।
১৯৮৮ সালে দিলারা হাফিজের নামে বাড়িটি সাময়িকভাবে বরাদ্দ দেয় ‘এস্টেট অফিস’। সে সময় তিনি ইডেন কলেজের প্রভাষক ছিলেন। বরাদ্দপত্রে উল্লেখ করা হয়, এতে স্থায়ী মালিকানা দাবি করা যাবে না, তবে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে বসবাস করা যাবে।
দীর্ঘদিন পর সৈয়দ নেহাল আহাদ নামের একজন ব্যক্তি বাড়িটির মালিকানা দাবি করেন এবং ২০১২ সালে আদালত তার পক্ষে রায় দেন। এরপর দিলারা হাফিজ মামলা করলে আদালত বাড়িটির স্থিতাবস্থা দেন, যা পরবর্তীতে স্থায়ী করা হয়। মামলাটি এখন ঢাকার সপ্তম সহকারী জজ আদালতে বিচারাধীন এবং ২৫ মে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার দিলারা হাফিজ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দিয়ে বাড়ির স্মৃতিমূল্য বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। পরদিনই, বুধবার সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
দিলারা হাফিজ ছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য। সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ এবং পরে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে অবসর নেন তিনি। তার স্বামী কবি রফিক আজাদ ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাদের দুই সন্তান অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ বর্তমানে প্রবাসে আছেন।
এ বিষয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, কবি রফিক আজাদের স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে বাড়িটির অংশবিশেষ সংরক্ষণের জন্য তিনি বহুবার চেষ্টা করেছেন। মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।